চোখে যখন অ্যালার্জি
চোখে অ্যালার্জি বেশ সাধারণ একটা সমস্যা। এটা অনেকেরই হয় এবং প্রায়ই হয়ে থাকে। বসন্তের শেষে, গরমের দিনে ও শরৎকালেই বেশি দেখা যায় এই সমস্যা। আর গুরুতর কোনো বিষয় না হলেও এটি বেশ বিরক্তিকর আর যন্ত্রণাদায়কও।
অ্যালার্জি হলে চোখ চুলকায়, লাল হয়ে যায়, কখনো জ্বালা করে। অনেক সময় চোখ দিয়ে পানি পড়ে। এর সঙ্গে থাকতে পারে হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি উপসর্গও।
বাইরের ধুলাবালি, ধোঁয়া, উড়ন্ত ময়লা, ফুলের রেণু ইত্যাদি থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। আবার ঘরে কার্পেট বা পর্দার ধুলো, পোষা প্রাণীর লোম ইত্যাদি থেকেও অ্যালার্জি হয়। এমনকি অনেকের প্রসাধনী বা পারফিউম থেকেও চোখ লাল হয়ে যেতে পারে। সবার অ্যালার্জি সমস্যা হয় না। যাদের অন্যান্য অ্যালার্জির ইতিহাস আছে, যেমন ঘন ঘন সর্দি বা নাক বন্ধ, হাঁপানি বা ত্বকে অ্যালার্জি; বা যাদের পরিবারের কারও এ ধরনের সমস্যা আছে, তাদেরই ঝুঁকি বেশি।
চোখে বারবার অ্যালার্জি হলে কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। যেমন ঘরের কার্পেট সরিয়ে দিন, ধুলাবালি ঝাড়া-মোছা থেকে বিরত থাকুন। পোষা প্রাণী থেকে দূরে থাকুন। কোনো প্রসাধনী দায়ী হলে তা ব্যবহার করা বাদ দিন। চোখের লেন্সও কখনো কখনো অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তা-ও বর্জন করতে হবে। বাইরে বেরোনোর সময় চোখে সানগ্লাস পরুন। হাঁচি-কাশি হলে চোখে হাত দেওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধোবেন।
হঠাৎ চোখ লাল হয়ে চুলকাতে শুরু করলে সাধারণ অ্যালার্জির ওষুধ শুরু করতে পারেন। চোখের ড্রপ বা মুখে খাবার ওষুধ। তবে ডিকনজেসটেন্ট ড্রপ এক সপ্তাহের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। চোখের জ্বালা বা অস্বস্তি কমাতে কৃত্রিম চোখের পানিও ব্যবহার করা যায়। চোখ রগড়ানো ভালো নয়, এতে সমস্যা আরও জটিল রূপ নিতে পারে। সাধারণ এসব চিকিৎসায় ভালো না হলে কিংবা চোখ বেশি লাল হয়ে ব্যথা করলে বা জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডা. পূরবী দেবনাথ
চক্ষু বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল।
০১ এপ্রিল ২০১৫, ০০:১৭ ; প্রথম আলো