মুখের ভেতরের শুষ্কতা

মুখের ভেতরের শুষ্কতা

মুখের ভেতরটা শুকিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো মুখে লালা ঠিকমতো তৈরি না হওয়া। অনেক সময় ঠোঁট ও জিব এত বেশি শুকিয়ে যায় যে রীতিমতো ফেটে যায়। ঠোঁটের কোনাও ফেটে যায় এবং খাবার গিলে খাওয়া ও কথা বলা কষ্টকর হয়ে ওঠে।

মুখের লালা তৈরি না হলে মুখের ভেতর খাদ্যকণা চূর্ণ হয় না ও পরিষ্কারও হয় না। সে জন্য মুখের দুর্গন্ধ হওয়াটাও স্বাভাবিক। অনেক ক্ষেত্রে গলার স্বরেরও পরিবর্তন হতে পারে। মুখ শুকিয়ে গেলে ব্যাকটেরিয়া অধিক পরিমাণে বেড়ে যাওয়াতে প্রদাহ তৈরি হয়।

লালাগ্রন্থির প্রদাহ বা অন্য কোনো সমস্যায় মুখ শুকিয়ে যেতে পারে। অনেক ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মুখের শুষ্কতা দেখা দিতে পারে। যেমন অ্যালার্জি বা ঠান্ডা জ্বরের ওষুধ বা কফ–সিরাপ, ঘুমের বা টেনশনের ওষুধ, মানসিক রোগের ওষুধ, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগের ওষুধ ইত্যাদি। রেডিয়েশন বা রেডিওথেরাপির ফলে লালাগ্রন্থির কার্যক্রম ব্যাহত হয়। কেমোথেরাপি অনেক সময় মুখের লালাকে শুকিয়ে ফেলে। এতে মুখের ভেতর শুষ্ক হয়ে যায়।

কোনো কারণে মাথা ও ঘাড়ের স্নায়ুগুলো আক্রান্ত হলে মুখে শুষ্কতা দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু স্নায়ু সরাসরি মস্তিষ্ক ও লালাগ্রন্থির বার্তা বহন করে। স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে লালা শুকিয়ে যেতে পারে।

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, পানিশূন্যতা, জ্বর বা সংক্রমণের কারণেও মুখ শুকিয়ে যায়। ধূমপান, তামাক, গুল বা জর্দা, সাদাপাতাও মুখের শুষ্কতার জন্য দায়ী।

কী করবেন?

মুখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা হলে রক্তে শর্করা পরীক্ষা করুন। কোনো ওষুধের কারণে হচ্ছে কি না, তা জেনে নিন। একজন দন্ত্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে লালাগ্রন্থি পরীক্ষা করে নিতে পারেন। মুখের ভেতর পরিষ্কার রাখুন। চিনিমুক্ত ক্যান্ডি বা চুইংগাম অথবা লং বা এলাচি মুখে রাখা ভালো। মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যায় কিছু ওষুধ দেওয়া হয়, যা চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করতে পারেন।

প্রতিদিনের নিয়মিত কিছু করণীয়

  • কিছুক্ষণ পরপর অল্প অল্প করে পানি গ্রহণ।
  • খাবারের সঙ্গে বেশি পরিমাণ পানি গ্রহণ চিবাতে বা গিলে ফেলতে সাহায্য করবে।
  • যেসব খাবারে অতিরিক্ত অ্যাসিড বা ক্যাফিন রয়েছে, সেগুলো এড়িয়ে চলা।
  • ছয় মাস অন্তর একজন দন্ত্য চিকিৎসকের কাছে মুখ ও দাঁত পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়া।

অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী

সাম্মানিক উপদেষ্টাবারডেম হাসপাতাল

আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯, ১৫:৪৩; প্রথম আলো

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *